বাংলাদেশের ক্রিকেট থেকে বিশ্ব ক্রিকেটে পরিচিত মুখ সাকিব আল হাসান। এবার তার বিদায়ের বার্তা। দিনক্ষণও অনেকটা জানিয়ে দিয়েছেন। ২২ গজের আঙ্গিনায় সাদা পোশাকে বল ও ব্যাট হাতে তাকে শেষ কবে দেখা যেতে পারে, সেটি তিনি নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন। দেশের মাটিতে মিরপুর টেস্টে সবশেষ ম্যাচটি তিনি খেলতে চান। তবে সেই শেষ ম্যাচটি খেলতে পারবেন কিনা, সেটি নিয়ে রয়েছে সংশয়। রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক কারণে তিনি অনেকটাই সমালোচিত হয়েছেন। সেসব বিষয় নিয়েও মুখ খুলেছেন তিনি।
গতকাল নিজের বিষয়ে সাকিব বলেছেন, ‘আমি মনে করি, আমি রিজনেবলি ওকে করেছি। আমি খুশি। কোনো অনুশোচনা নেই। জীবনে কখনো অনুশোচনা ছিল না, এখনও নেই। যত দিন উপভোগ করেছি, আমি ক্রিকেট খেলেছি। আমার মনে হয়েছে, এটা বাংলাদেশ ক্রিকেট ও আমার জন্য সঠিক সময়, সে কারণে এই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া। কোচ, অধিনায়ক, নির্বাচক, বোর্ড সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া। তারা সবাই আমার অবস্থা বুঝতে পেরেছেন।’
আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে সাকিব এখন হত্যা মামলার আসামী। এছাড়া শেয়ার লেনদেনে কারসাজির অভিযোগে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তাকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। এই বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘একটা মামলা হয়েছে, আসলে সবারই অধিকার আছে। কিন্তু আপনারা সবাই জানেন, এটা কেমন ধরনের মামলা ছিল কিংবা আমি ঐ সময় কোথায় ছিলাম। আমার কাজ কী ছিল কিংবা আমি কী করছিলাম। সুতরাং এ বিষয়টা নিয়ে খুব বেশি বলতে চাই না।’
জরিমানার বিষয়ে সাকিব বলেছেন, ‘আমার জীবনে আমি আসলে নিজে থেকে কখনো ট্রেড করিনি, কেউ যদি এটা বন্ধে ট্রেডিং নিয়ে কথাও বলেছি, প্রমাণ দিলে আমি খুশি হব। এসব আসলে এখন যে কেউ যে কারোর মতো করতে পারে। এ জিনিসগুলো যদি সুন্দর করে বলত, আমার জন্য মানসিকভাবে ভালো হতো। কারণ, মিথ্যা অভিযোগগুলো আমার মনে হয় না ভালো কিছু করে দেশের জন্য বাইরের মানুষের কাছে। আমি যেহেতু ট্রেডই করিনি নিজ থেকে, স্বাভাবিকভাবে আমার ভুল করার বা ওটার সঙ্গে যে শব্দগুলো যোগ করা হয়েছে, সেটাও আমার জন্য দুঃখজনক।’
হত্যা মামলা ও ৫০ লাখ জরিমানা নিয়ে খেলায় মনোযোগ ধরে রাখার বিষয়ে এই অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘কঠিন, খুবই কঠিন। আমি কীভাবে রেখেছি এটি আল্লাহই জানেন। আমিও জানি না আসলে।’ তবে বিপদের সময়ে সতীর্থদের পাশে পেয়ে খুশি তিনি। সাকিব বলেছেন, ‘আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তাদের সমর্থন সবসময় আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। প্রতিদিনই তারা আমাকে সমর্থন করেন। তাদের এই সমর্থনের কারণে আমি এতদূর আসতে পেরেছি।’
এ দিকে সাকিব দেশে ফিরে নিজের শেষ টেস্ট ম্যাচটি খেলতে পারবেন কিনা, সেটি নিয়ে রয়েছে সংশয়। বোর্ডের ওপরে সাকিব আস্থা রাখলেও বোর্ড নির্ভর করছে সরকারের সিদ্ধান্তের ওপরে। সভাপতি ফারুক আহমেদ গতকাল তেমনই বলেছেন। ফলে কানপুর টেস্টই সাকিবের শেষ টেস্ট ম্যাচ হবে কিনা, সেটি এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র।